নিজস্ব প্রতিবেদকঃ গায়ে হলুদের দিন বাইক র্যালি করে সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছেন নববধূ ফারহানা আফরোজ। ১৪ আগস্ট পাবনার কাশিনাথপুরের বাসিন্দা ও টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ার হাসনাইন রাফির সঙ্গে যশোর শহরের সার্কিট হাউজ এলাকার মেয়ে ফারহানা আফরোজের বিয়ে হয়। ১৩ আগষ্ট গায়ে হলুদের দিনে শহরজুড়ে বন্ধু-বান্ধব ও সাথীদের নিয়ে বাইক র্যালি করেন কনে ফারহানা। ব্যতিক্রমী এ আয়োজনের ছবি সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়। তবে একজন নারী বাইকারের বাইক চালিয়ে বিয়ের অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণের ঘটনাটি স্বাভাবিকভাবে সমাজের অনেকেই মেনে নিতে পারেননি। এ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে শুরু হয় সমালোচনার ঝড়। শুধু তাই নয়, ফারহানার গায়ে হলুদের ছবি এবং ভিডিও ইউটিউবসহ নানা যোগাযোগমাধ্যমে বিকৃতভাবে উপস্থাপন করে তার নামে বিভিন্ন কুৎসাও রটনা হচ্ছে।
এর প্রতিবাদ জানিয়ে মঙ্গলবার (২৫ আগস্ট) ফেসবুকের ভয়েজ অফ রাইটস গ্রুপে একটি স্ট্যাটাস দেন ফরহানা। এখানে তিনি মেয়ে বাইকারের দৃষ্টিকোণ থেকে তার অবস্থান বর্ণনা করেন। তার দেয়া স্ট্যাটাসটি দৈনিক প্রত্যয়ের পাঠকদের জন্য তুলে ধরা হলো-
নতুন কিছু দেখলে সবাই হুমড়ে পড়বে। ভাল খারাপ সব ই বলবে৷
আমি ফারহানা আফরোজ বর্তমান ফেসবুকে খুব ভাইরাল হচ্ছে আমাকে নিয়ে। কিন্তু আমি কি বলেছি আমাকে ভাইরাল কর। আমি নিজে বাইক চালাই। ঢাকাতে থাকি, অহ রহ ছেলেরা হলুদে বাইক নিয়ে এন্ট্রি দিচ্ছে। ও মেয়ে রা নেচে৷ আমি মেয়ে হয়ে বাইক চালাতে পারি। তাই ভাবলাম বাইক চালিয়ে ই এন্ট্রি দি।
এখন করনা কালিন সময়ে বিয়ের প্রগ্রাম করতে থানা থেকে অনুমতি প্রয়োজন হয়। আমার ক্ষেত্রে ও তার ভিন্ন ছিল না। সকল অনুমতি নিয়ে ই আমার হলুদ ও বিয়ের প্রগাম। সব ই ঠিক থাকত। মেকাপ, ড্রেস, সাজ। এত কথা ও হত না যদি বাইক নিয়ে পার্লার থেকে প্রগ্রামে না যেতাম।
কথা হল। ভাল খারাপ সব হল। আমার ছবি আমার থেকে অনুমতি না নিয়ে গ্রুপে গ্রেপে বাজে পোস্ট। একজন বিশিষ্ট ব্যেক্তি টিপু ভাই sk media নিউজ করল কেন? আজ মেয়ে হয়ে বাইক চালিয়ে এন্ট্রি তাই? কত মেয়ে বাইকার আজ বাংলাদেশ৷ তাহলে আমি যদি হলুদে তে বাইক চালিয়ে ঢুকি, কিছু মানুষের এত সমস্যা যে গ্রপে বাজে পোস্ট তো বটে ই। কিন্তু ইউটিউব এ ট্রোল। এগুলো কি মেনে নেওয়া যায়?? উনি খুব বড় ইউটিউবার। তার থেকে অন্তত এটা আশা রাখি না।
আমার সাথে এটা হয়েছে আমি চাই না এরাকম হেরাসমেন্ট আর কোন মেয়ে বা লেডি বাইকারের সাথে হোক। এমনিতে ই সমাজে আমারা যারা বাইক চালাই তাদের অনেকের কথার সাথে লড়াই করতে হয়। ধিরে ধিরে এগুলো কুমবে তা না বেড়ে ই চলেছে?? আর কতদিন দেখব আমাদের সাথে এই অত্যাচার জানি না।
যেখানে আমাদের প্রধানমন্ত্রী মেয়ে, স্পিকার মেয়ে, দেশ মেয়েরা চালাই সেখানে একটা মেয়ে যে বাইক জানে তার বাইক চালনো কেন সমাজ ভাল ভাবে নিচ্ছে না?? নিচ্ছে না মানলাম কিন্তু তার চরিত্র নিয়ে কথা আজে বাজে। এগুলো কিভাবে সহ্য হয়?? আমার ও পরিবার আছে। বর আছে শশুরবাড়ি আছে৷ আমার বর শশুরবাড়ি না হয় আমার পক্ষে আছে। আমার কোন সমস্যা নাই। কিন্তু সমস্যা না থাকলে ই কি এভাবে একটা মেয়ের চরিত্র নিয়ে কথা বলতে হবে?? শুধু বাইক চালানো ছবি দেখে সবাই আমার চরিত্র সনদ দিয়ে দিল??
এগুলির বিচার কি হবে??